Sunday, September 4, 2011

স্মৃতি


খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে তোমার সাথে। জানো, যখন ইচ্ছেটা খুব বেড়ে যায়, কিন্তু কথা বলতে পারি না, প্রচন্ড একটা খারাপ লাগা অনুভূতি বুকে চেপে ধরে। কল্পনায় কথা বলে কি আর দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো যায়?
দিন শেষে, সংসারের কাজ শেষ করে, বিছানায় শুয়ে মোবাইলটা হাতে নিলে। এক পলক তাকালে ঘড়ির দিকে। মোটামুটি মাঝরাত। ফোন দিতে গিয়েও থমকে গেলে। আবারও তাকালে ঘড়ির দিকে। ভাবলে, “ও এখন কি করছে? নিশ্চয় জেগে জেগে কিছু একটা করছে। রাতের ঘুম ওকে কাবু করতে পারে না! নাহ! ছেলেটিকে শুধরানো গেল না! ফোন দিলে জানা যেত কি করছে?” কিন্তু, ফোন দিতে না পারার তীব্র যন্ত্রণা বুকে ছড়িয়ে পড়ল। বিছানায় তুমি কাঁদতে পারছ না। বাথরুমে গিয়ে যেই দরজা বন্ধ করলে, চোখের জল আর বাঁধ মানল না।
            ঘর গোছাতে গিয়ে তোমার চোখে পড়ল আমার চিঠি, ছবি, কার্ড,  ডায়েরী। মেঝেতে বসে ছবির উপর হাত বোলাতে শুরু করলে। মনে পড়ল সেই স্মৃতির কথা, বলেছিলাম তোমায়, “যখন আমি থাকব না, এই ছবিগুলো দেখবে আর ভাববে আমি তোমার পাশে আছি, অস্থিত্বে আছি। ভূলেও ভাববে না আমি তোমাকে ভূলে গেছি, তোমাকে ছেড়ে গেছি। সেটা কি কখনও সম্ভব?”
            মনে পড়ল আরেকটা স্মৃতির কথা, আমাকে প্রশ্ন করেছিলে, “আমাকে কতটুকু ভালবাস তুমি?” উত্তরে বলেছিলাম, “এতটুকু!” কপট রাগ করে বলেছিলে, “কি?  মাত্র এতটুকু?” তখন আমি বলেছিলাম, “আরে অন্য হাতটা জায়গামত নিয়ে আসিনি এখনো!”
বাইরে তাকালে তুমি। ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। এক দৌড়ে ছাদে যাবার প্রবল ইচ্ছেটাকে বশ মানালে অনেক কষ্টে। তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে চেয়েছিলাম। শর্ত দিয়েছিলে আমার চোখে কাপড় বাঁধতে হবে, দু’হাত পেছনে নিয়ে বাঁধতে হবে আর সময়টা অবশ্যই যেন মাঝরাতে হয়। তখন প্রশ্ন করেছিলাম, “সব তো ঠিক আছে, কিন্তু হাত যে বেঁধে দিলে? আমি যদি ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যাই ঠেকাব কি করে?” তুমি উত্তরে বলেছিলে, “তুমি পড়বে কেন? আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে রাখব না?”
আনমনে গিটার বাজাচ্ছি। জানো, আমার সামনে একটা আইসক্রীম রাখা। আমার মন চলে গেছে অনেক দূরে। মেঘের ফাঁকে সূর্য যেমন উঁকি দেয়, ঠিক তেমনি স্মৃতির মেঘগুলোর ফাঁকে একটি স্মৃতি উঁকি দিল। বলেছিলে, “আইসক্রীম আমার খুব প্রিয়। শোন, আমি আইসক্রীম খাবার সময় হাঁ করে তাকিয়ে থাকতে পারবে না। তবে তোমাকে এই একটু খেতে দেব!”
আমার সামনে রাখা আইসক্রীম পুরোটাই তোমার। এসো, নিয়ে যাও তবে।

No comments:

Post a Comment